শনিবার, ০৪ মে ২০২৪, ০১:৫৩ পূর্বাহ্ন

সংবাদ শিরোনাম :
সিনেমার বাজেট কেন বাড়ে না

সিনেমার বাজেট কেন বাড়ে না

স্বদেশ ডেস্ক:

সিনেমা হল বন্ধ, নির্মাণ কমেছে। বেকার হয়ে পড়ছেন অনেক তারকা। এমন অনেক বিষয় নিয়ে সংশ্লিষ্ট অঙ্গনের সবাই অনেক বছর যাবৎই আছেন হতাশায়। এর পর শুরু হয় করোনার হানা। এটা যেন মরার উপর খাড়া ঘাঁ। আর করোনার পর দর্শক যাচ্ছে না সিনেমা হলে। ফলে আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছে- মুক্তিপ্রাপ্ত সিনেমাগুলো। সিনেমা সংশ্লিষ্টরা বলছেন ব্যবসায়িকভাবে লাভবান হতে এখন দুটি উপায় আছে- সিনেমা হলে দর্শক আসা অথবা কম বাজেটের সিনেমা নির্মাণ। দর্শক সিনেমা হলে আসবে কিনা সেটার ওপর কারও হাত নেই। কারণ মানুষ এখনো করোনা নিয়ে ভয়ে আছে; কিন্তু কম বাজেটের সিনেমা নির্মাণ করে অল্পসংখ্যক সিনেমা হলে কিছুসংখ্যক দর্শক দিয়েও লগ্নিকৃত অর্থ ফেরত পাওয়া সম্ভব বলে মনে করছেন অনেকে। তাই সিনেমার বাজেট দিন দিন কমেই চলছে। তারকার অভিনেতা অভিনেত্রী থাকার পরও বাজেট বাড়ছে না। আর বাজেট বাড়ছে না বলেই তারকারও তাদের পারিশ্রমিক কমাচ্ছে। কারণ সিনেমা বাঁচলেই তারকারা কাজ করতে পারবেন। যেসব তারকা পারিশ্রমিক কমিয়েছেন তারা হলেন- শাকিব খান, মাহিয়া মাহি, নুসরাত ফারিয়া, বাপ্পী চৌধুরী, মিশা সওদাগর, বিদ্যা সিনহা মিম, পূজা চেরি প্রমুখ।

বাংলা সিনেমার আশার আলোর নাম শাকিব খান। তার সিনেমা নিয়েই ব্যবসায়িকভাবে লাভবান হতেন প্রাযোজক ও হলমালিকরা। সিনেমার রমরমা ব্যবসার সময় তার প্রতিটি সিনেমার বাজেট ছিল ২ কোটির ওপর। এখন সে বাজেট কমে এক থেকে দেড় কোটিতে নেমেছে। চিত্রটা শুধু শাকিব খানের ছবি দিয়ে বিচার করলে হবে না। কারণ অন্য তারকাদের দুই-একটি ছবির বাজেট থাকে এই পরিমাণ। তা ছাড়া বাকি সব ছবিই এখন নির্মাণ হচ্ছে ৪০ থেকে ৮০ লাখ টাকার মধ্যে। জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার জয়ী পরিচালক কাজী হায়াৎ আগে একটি ছবি নির্মাণ করতেন দেড় থেকে দুই কোটি টাকার মধ্যে। কিন্তু গেল বছর তিনি ‘যোগ্য সন্তান’ ছবির বাজেট ধরেছেন ৮০ লাখ টাকা। কাজী হায়াৎ বলেন, ‘খারাপ পরিস্থিতি না হলে এই ছবির বাজেট থাকত দেড় থেকে দুই কোটি টাকা। এখন সেটি অর্ধেক টাকায় নির্মাণ করতে হচ্ছে। প্রযোজকরা ছবিতে বিনিয়োগ করেন ব্যবসার জন্য; কিন্তু বর্তমানে ব্যবসার অবস্থা শোচনীয়। পরিচালক হিসেবে প্রযোজককে সহযোগিতা করার একটা দায় আছে। তাই এই কম বাজেটেও ছবিটি নির্মাণ করছি।’

‘বীরত্ব’ নামের একটি ছবির বাজেট ছিল দুই কোটি টাকা। পরিচালক সাইদুল রানা বলেন, ‘প্রথমে ২ কোটি টাকা বাজেট ধরা হয়েছিল। এখন ১ কোটি ২০ লাখ টাকার মধ্যে শেষ করার চেষ্টা করছি।’ পরিচালক মোস্তাফিজুর রহমান মানিকও কম বাজেটে সিনেমা নির্মাণ করছেন। তিনি বলেন, ‘এ পরিস্থিতিতে কম বাজেটে সিনেমা বানানো ছাড়া উপায় নেই। কম বাজেটেও শক্তিশালী গল্প নির্মাণ করাই এখন পরিচালকদের চ্যালেঞ্জ।’

নির্মাতা মনতাজুর রহমান আকবরও বর্তমানে কম বাজেটে সিনেমা নির্মাণ করছেন। এখন ২৫ থেকে ৩৫ লাখ টাকা বাজেটের মধ্যে নির্মাণ করছেন একের পর এক ছবি। তিনি বলেন, ‘বাজেটের দিকে তাকিয়ে থাকলে এখন আর সিনেমা বানানো যাবে না। এখন কম হোক বেশি হোক কাজ করা দরকার। একটা কাজ মানেই পরিচালক, শিল্পী, টেকনিশিয়ানদের ঘরে কিছু টাকা যাওয়া। না খেয়ে মরার চেয়ে অল্প টাকায় কাজ করে খেয়ে বেঁচে থাকাই উত্তম বলে মনে করছি।’

কম বাজেটে নির্মাণ করা হয়েছে অপু বিশ্বাস ও বাপ্পী অভিনীত ‘প্রিয় কমলা’। অন্যদিকে অপু বিশ্বাস, নিরব ও নওশাবার ‘ছায়াবৃক্ষ’ সিনেমার বাজেটও কম। নির্মাতা বদিউল আলম বলেন, ‘প্রযোজকরা বাজেট কমিয়ে দিয়েছেন। ভালো বিষয় যে, আমাদের শিল্পী ও টেকনিশিয়ানরাও অনেকে পারিশ্রমিক কমিয়েছেন। আমি মনে করি কম বাজেটে বেশি সিনেমা নির্মাণ করে ইন্ডাস্ট্রিকে সচল রাখতে হবে। ইন্ডাস্ট্রি সচল থাকলে সবকিছুই এক সময় স্বাভাবিক হয়ে উঠবে।’

এই সময়ে বড় বাজটের সিনেমাও নির্মাণ হচ্ছে কিছু। মুক্তির জন্য প্রস্তুত বিগ বাজেটের পুলিশি অ্যাকশন থ্রিলার গল্পের সিনেমা ‘মিশন এক্সট্রিম’। ছবিটি নির্মাণ করেছেন ফয়সাল আহমেদ ও সানী সানোয়ার। ছবিটিতে অভিনয় করেছেন আরিফিন শুভ, সাদিয়া নাবিলা, জান্নাতুল ফেরদৌস ঐশী ও তাসকিন রহমান। দীপংকর দীপন নির্মাণ করেন ‘অপারেশন সুন্দরবন’। ছবিটিতে অভিনয় করেছেন রিয়াজ, নুসরাত ফারিয়া, সিয়াম, রোশান। অনন্ত জলিল অভিনীত ব্যয়বহুল ছবি ‘দিন দ্য ডে’। বাংলাদেশ ও ইরানের যৌথ প্রযোজনায় নির্মিত এই সিনেমাটি পরিচালনা করছেন ইরানি নির্মাতা মুর্তজা অতাশ জমজম।

দয়া করে নিউজটি শেয়ার করুন..

© All rights reserved © 2019 shawdeshnews.Com
Design & Developed BY ThemesBazar.Com
themebashawdesh4547877